Description
আকাশের অনেক উঁচু থেকে দেখলে চণ্ডিপুরের চারপাশটাকে মনে হবে যেন চ্যাপ্টা একটা বর্তন। এই বর্তনের সবুজ অংশটা যে ধান, এবং বাকিটা যে পানি, যেহেতু আকাশ এবং আকাশের মেঘ এবং নীল তাতে প্রতিফলিত হচ্ছে-যেন ক্ষয় হতে থাকা একটা আয়নায়-এক চোখ কানা বুড়া শকুনটাও তা বলে দিতে পারত। কারণ আকাশের ওই উঁচুতে ওড়ার অধিকারটা ছিল শুধু তারই। কিন্তু গত দশ বছর থেকে শকুনটাকে আর কেউ দেখতে পায় না।
হয়তো চণ্ডিপুরের আকাশ ছেড়ে শকুনটা চলে গেছে অন্য কোনো আকাশে অথবা মরে গেছে। শকুনটা নিরুদ্দেশ হওয়ার বছরখানেক পর হানিফ মিয়ার মেয়ে সাফিয়া তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, গরু-টরু মারা গেলে শকুন তার সৎকার করে, শকুন মারা গেলে তার সৎকার কে করে বাবা? সাফিয়া তখন স্কুলে পড়ে, ক্লাস ফোর-এ, তার কথার কোনো উত্তর হানিফের কাছে ছিল না।
হানিফ পাখি অথবা প্রকৃতি বিজ্ঞানী নন, হানিফের কাজ জমি চাষ দেওয়া, মাছ মারা। নিজে তিনি এসব কাজ করেন, কামলা রেখেও করান, তার জমিও খুব যে কম তা নয়, তবে চ্যাপ্টা বর্তনের মধ্যে ডাল আর ভাত সমান সমান রাখলে যেমন হয়, ভাতটা ঠিক ভাত থাকে না, ডালটাও চলে যায় ভাতের অধিকারে, চণ্ডিপুরের আশপাশে ধানের সঙ্গে পানির কবেকার একটা বিবাদ অথবা বন্ধুত্বে ঠিক তাই হয়েছে।
Reviews
There are no reviews yet.