Description
একুশ শতকের বাংলাদেশে নারী আর পর্দার আড়ালে লুকিয়ে নেই। তাকে দেখা যায় জনজীবনের সর্বত্রই। তার সামাজিক মর্যাদা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ কওে ঘরের বাইরে। সেখানে সে ছোটোবড়ো নানা পদে অধিষ্ঠিত-ঝাড়ুদারনি থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত। স্কুলের শিক্ষিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা; কেরানি থেকে বিচারপতি পর্যন্ত। লেখাপড়ায় সে এগিয়ে গেছে ছেলেদের প্রায় পিছনে ফেলে। হিমালয় থেকে আরম্ভ করে অ্যান্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শিখরে উঠেছে বাঙালি নারী।
কিন্তু দেড় শো বছর আগেও মেয়েদের জন্যে লেখাপড়া, ঘরের চার দেয়ালের বাইরে যাওয়া, গাড়িতে চড়া, জুতো পায়ে দেওয়া, দিনের বেলা স্বামীর সঙ্গে দেখা করে অথবা কথা বলা ছিলো একেবারে নিষিদ্ধ। পুরুষ-শাসিত বাঙালি সমাজে নারীরা তখন ছিলো একটা জন্তুর মতো। তার ভূমিকা ছিলো একের ভিতরে পাঁচ-একই সঙ্গে সে ছিলো রাঁধুনি, পরিচারিকা, আয়া, সন্তানের মা এবং শয্যাসঙ্গিনী।
তারপর দেড় শো বছরে আমূল পরিবর্তন এসেছে সেই অবস্থার। কিন্তু কী করে? কাদের চেষ্টায়? কোন নারীরা প্রথমে পথ দেখিয়েছিলেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার? মাত্র দেড় শো বছরে এতো বড়ো সামাজিক পরিবর্তন কী কওে সম্ভব হলো?
এই গ্রন্থে সেই কথাই লেখা হয়েছে, কয়েকজন নারীর দৃষ্টান্ত দিয়ে। রাসুন্দরী দেবী অবিশ্বাস্যভাবে নিজে নিজে লেখাপড়া শিখে বাঙালিদের মধ্যে সবার আগে আত্মজীবনী রচনা করেছিলেন। কৈলাসবাসিনী দেবী সবার আড়ালে স্বামীর কাছে লেখাপড়া শিখে তিনখানা বই লিখেছিলেন। জ্ঞানদানন্দিনী দেবী বাঙালি নারীদের শাড়ি পরা শিখিয়েছিলেন। নিজে গিয়েছিলেন বড়োলাটের সঙ্গে ডিনার করতে। কৃষ্ণভাবিনী দাস বিলেতে গিয়ে একটি চমৎকার ভ্রমণকাহিনী লিখেছিলেন। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারীদের জন্যে পুরুষের সমান অধিকার এবং মর্যাদার দাবি তুলেছিলেন। মোট কথা, ইতিহাস রচনা করেছিলেন তাঁরা।
সেই ইতিহাসই এ বইয়ের বিষয়বস্তু।
Reviews
There are no reviews yet.