Description
যখন কৃষ্ণনগরের মানুষের দারিদ্র্যের চিত্র, সাম্য ও বিপ্লবীচেতনার আখ্যান রচনা করছেন তখন নজরুল নিজেও লড়ছেন নিদারুণ দুঃখ-কষ্ট এবং দুঃসাধ্য কৃচ্ছ্রসাধনের সঙ্গে। মিখাইল বাখতিনের উপন্যাসতত্ত্বের আলোকে মৃত্যুক্ষুধারও তাই যেন রূপান্তর ঘটে ‘প্রত্যক্ষ বাস্তবতা’র শিল্পে। তাই পুতুল খেলার কৃষ্ণনগরে কোন এক অদৃশ্য শক্তিতে জড়বৎ মাটির পুতুলের মতো প্যাকালে, মেজ-বউ কিংবা কুর্শিও যেন হয়ে ওঠে, রয়ে যায় অদৃশ্য কোনো খেলোয়াড়ের ইচ্ছায় নির্ভরশীল, নিশ্চেষ্ট। মুক্তিকামী আনসারের লড়াইও তাই হার মানে। নিজের প্রথম উপন্যাসের ভাষা একান্তই নজরুলীয় বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ। চরিত্রের স্বাভাবিকতার স্বার্থে ভাষার যমকে, শ্লেষে, উৎপ্রেক্ষায় প্রাত্যহিক শব্দের নতুনতর ব্যঞ্জনায় স্বদেশপ্রেমের গৌরবে মৃত্যুক্ষুধা বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী কীর্তি। নিজের প্রথম উপন্যাসেই নজরুল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন জীবনের নিষ্ঠুর বাস্তবতা আর ক্ষুধায় কাতর ভারতবর্ষের দরিদ্র নিম্নবর্গের মানুষেরা কীভাবে একটু ভালো করে বাঁচবার আশায় বহু চর্চা, সংস্কার এবং আজন্ম লালিত মূল্যবোধের প্রাচীর অবলীলায় পেরিয়ে যায়। বিসর্জন দেয় ব্যক্তিত্ববোধ, আপন সংস্কৃতি ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। ভারতবর্ষের ঔপনিবেশিক দুঃশাসনের কালে সৃষ্ট এক নির্মম নিয়তির আলেখ্য মৃত্যুক্ষুধা।
Reviews
There are no reviews yet.