Bahariy

1 In Stock

তেরো ঘর এক উঠোন

Original price was: ৳ 350.00.Current price is: ৳ 301.00.

Name তেরো ঘর এক উঠোন
Category সমকালীন গল্প
Author মুনীরা কায়ছান
Edition ১ম প্রকাশ, ২০২২
No of Page 128
Language বাংলা
Publisher উপকথা প্রকাশন
Country বাংলাদেশ
Weight 0.29 Kg

1 in stock

Guarantee Safe & Secure Checkout

Description

নার্সিসাস –

” হাসান, দিন দিন বয়স লাগে কমতাছে আমার। আরেকবার নিকা করি কী কস? ” বদরুদ্দিন হাসতে হাসতে বলে। হাসান জানে বৌপাগল এই লোক বৌকে ভালবাসে অন্ধের মত। তবু রসিকতা করে সে মাঝে মাঝেই। হাসান নিজেও হাসে তার কথা শুনে। সপ্তাহের ব্যবধানে যে কতটা বুড়িয়ে গেছে এই লোক দেখলে চেনা যায় না। নিজেকে মানুষ এত ভালবাসে কিভাবে! তবে এত ভাবার সময় হয় না তার, সে মন দেয় দোকানে সদ্য আসা এক অচেনা ক্রেতার দিকে।

বামুনের চাঁদ –

অনিমার চোখ থাকলে সে দেখতে পেত তার মৃত্যুর কারণ সেই অনুভূতির বাহককে। একগুচ্ছ কাল গোলাপ হাতে কেউ দাঁড়াল নিথর হয়ে আসা অনিমার চোখের সামনে। এম্বুলেন্স কিংবা পুলিশকে সে ডেকে দিল না, বলা ভাল ডাকতে পারল না। অজানা আগন্তুক অস্ফুটস্বরে কেঁদে উঠল না বলতে পারার যন্ত্রণায়।

একটা হলুদ গোলাপ-

আমি রোজ হলুদ গোলাপটা তার হাতে দেখতে চাই। পারি না। তার চশমার মোটা কাচ ভেদ করে গোলাপ দেখে ভালবাসা জেগে ওঠাটা আমি দেখতে চাই খুব করে। হলুদ গোলাপ দেবার একটা ছোট্ট কারণ আছে। যদিও লাল রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি, হলুদ রঙের পেরিফেরাল ভিশন লালের চেয়ে প্রায় ১.২৪ গুণ বেশি। আলো কম হলেও হলুদ গোলাপ দৃষ্টি থেকে হারাবার কোন সুযোগই নেই। মেয়েটির অবতল লেন্স পরা ক্ষীণদৃষ্টির চোখ সহজে সে রং দেখবে বলে গোলাপরাণীর হলুদ রংটাই বেছে নিয়েছিলাম। তবে মেঘনারীর সুদৃষ্টি এখনো সে লাভ করতে পারেনি। হয়ত একদিন পারবে।

শম্ভূক-

” আমি জানি আপনে বিশ্বাস যাবেন না। কিন্তু সত্য কথা। মাইয়া আমার দশ বছর ধইরা এই এক রকমই আছে। একটুও বড় হয় না। এখন তার বয়স হইত তের”, ভদ্রলোকের কণ্ঠ কেঁপে গেল যেন সে ধরেই নিয়েছে তার কথা আমার মধ্যে চরম অবিশ্বাস তৈরি করবে। আর ঠিক তা-ই হল।

আমি ভীষণ বিরক্ত হলাম। এত সুন্দর দিন এসব বুজরুকি কথা শুনে নষ্ট হবে!

চন্দ্রাহত-

রাত নামতেই পূর্ণিমার আলোয় একটা আবছা অবয়ব দীর্ঘতর হল পুকুরপাড়ে। ফুঁপিয়ে কাঁদছিল যেন কেউ।

গ্রামবাসী মায়মুনা মেয়েটাকে অধার্মিক হিসেবে মনে রাখলেও রোজ রাতে পুকুরপাড়ে গায়ের রক্ত জমে যাওয়া মৃদু শব্দ শোনা যায় পূর্ণিমা এলেই। তাতে মিশে থাকে ভীষণ হাহাকার। জিন-পরীর গল্পে অভ্যস্ত আমজাদের বাজার গ্রামের লোকজনের পুরনো গল্পে রঙ চড়াতে সুবিধে হয়। মুন্সেফপুর গ্রামের সাইফুল মুন্সী অবশ্য বুভুক্ষুর মত পূর্ণিমার অপেক্ষাতেই থাকে।সেদিনের ঝাপসা আলোয় মুহূর্তের জন্যে দেখা বৃষ্টিদিনের মেয়েটা পূর্ণিমা এলেই যেন খুব কাছে চলে আসে তার। আর কল্পনায় হয়ে ওঠে জোছনাকুমারী-যে কল্পনায় বাস্তব-অবাস্তবের পার্থক্য গৌণ হয়ে যায়।

আয়ু-

সন্ধ্যা নামছে। মাগরিবের আজান হচ্ছে। অনেক অনেক বছর পরে হঠাৎ মরিয়ম সেই মৃদু শব্দটা পেল। তার ছেলেটা যেই ঝড়বৃষ্টির রাতে মারা গেল সে রাতে এমন পদশব্দ পেয়েছিল মরিয়ম। স্পষ্ট মনে আছে তার শত বছরের স্মৃতির ভীড়েও। মরিয়মের ভীষণ আনন্দ হল।

স্রষ্টার মায়া-

গল্পটা রাশিয়ান মেয়ে এলভিরা আর বাঙালি মেয়ে সত্যের। এলভিরা অর্থ সত্য। স্রষ্টা তার সৃষ্টিকে ভীষণ ভালবাসেন বলেই একই রকম দুটো সৃষ্টির মাঝে বেছে নিতে পারেননি কোন একজনকে। স্রষ্টার মায়া কে আমরা সৃষ্টিরা কেন সবসময় নিষ্ঠুরতাই ভেবে নেই তার উত্তর কেউ দেয় না…

শাপমোচন –

সব প্রার্থনা নামঞ্জুর শুনে অভ্যস্ত বান্দার এই প্রার্থনা যে স্রষ্টা এত জলদি মঞ্জুর করে ফেলবে কেউ বোঝেনি। বোঝেনি হয়ত প্রার্থনাকারী নিজেও। আবারো বাজ পড়ল। বজ্রাহত প্রেমিকের চিরমুক্তি ঘটল বিরহের অসুখ থেকে। এই পৃথিবীতে যখন বৃষ্টি বিরহ জন্ম দিচ্ছে নাগরিক প্রেমিক-প্রেমিকাদের মনে, অন্য পৃথিবীতে তখন এক প্রেমিকের বিরহ ঘুচেছিল।

ওগো বিদেশিনী-

” রেস্টুরেন্টে আমরা সাতটা প্লেটার অর্ডার করেছিলাম। সাতজন ছিলাম আমরা র‍্যাচেল সহ। সবার সামনে প্লেট চামচ বাটি আর খাবার। র‍্যাচেলের সামনেও ছিল। অথচ র‍্যাচেল ছিল না। এই ছবি নিয়ে তুমুল আলোচনা হতে পারত তবে মালিক তার নতুন রেস্তোরাঁ নিয়ে অহেতুক বিব্রত হতে চাননি। চতুর সাংবাদিকরা কাগজের কাটতি বাড়াতে ভৌতিক রঙ চড়াতে চাইল। রেস্তোরাঁর মালিক ঠিকঠাক সামাল দিলেন সব। ”

” কী বলছেন! ” আমার গলার স্বর উত্তেজনায় নিজেই চিনতে পারলাম না। ” ছবিটা আছে? ”

ডাক্তার নাভিন মোবাইল বের করলেন। হলদেটে পেপার কাটিংয়ের ছবিটা তুলে রেখেছেন সযত্নে। চারপাশের অনেকটা পোকায় কেটে নিলেও ছবিটা স্পষ্ট। ” এই দেখো”। আমি হাতে নিলাম তার বাড়িয়ে দেয়া মোবাইলটা।

হৃদয়সঙ্গী

জানি এক পৃথিবীর আলো-জোছনা আমাদের ছুঁয়ে যাবে। বছরের প্রথম বৃষ্টি দেখলেই আমাদের ছুঁতে ইচ্ছে হবে। আমরা রবীন্দ্রনাথ শুনতে শুনতে দুজনের কথাই ভাববো। আমরা ভালবাসবো এভাবেই। জানবো পৃথিবীতে আমরাই হলেও হতে পারতাম মুরাকামির গল্পের সেই শতভাগ মানানসই জুটি।

ব্যাঙ রাজকন্যা

” জানি বিশ্বাস করছেন না। বিশ্বাস করাবার চেষ্টাও করছি না। তবে যা ঘটেছে তা-ই বলছি আমি,” ভদ্রলোকের চোখের দৃষ্টি কঠিন হল। গল্প শুরু করলেন তিনি, ” আমি দেখলাম আমার চোখের সামনে একটা ভয়াবহ কুৎসিত নারী অপূর্ব সুন্দর কোন নারী হয়ে গেল। তার জট ধরা চুলগুলো কোন সরোবরের মত নেমে এল কোমর ছাড়িয়ে। পোশাকটা খসে পড়ল রূপকথার ব্যাঙ রাজকুমারের মত। গায়ের চামড়াটা বদলে হয়ে গেল সোনার রঙ।

শুভঙ্করের নন্দিনী

সোহান দেখছিল তার স্কার্ট- টপস পরা ঘর্মাক্ত মুখের স্ত্রীকে। একহারা গড়নের শ্যামলা মেয়েটা তো শুধু তার নন্দিনী। শুভঙ্কর শুধু সেই। আর কেউ তাকে নিয়ে যেতে পারবেনা- দশ দিগন্তের অন্ধকার হলেও না।

সিন্ডারেলার জুতো

সেদিন বিকেলের তাড়া ছিল না সন্ধ্যে হবার কারণ সে বিকেল ছিল রূপকথার।

তবে সে মুহূর্তে আমাদের সিন্ডারেলা কিংবা রাজপুত্র কারোই জানা ছিল না অনেক অনেক বছর পর জেনির দোকানের সামনের বেঞ্চিতে বসে কাজল তার মিষ্টি মেয়েকে শোনাবে এক বাস্তব সিন্ডারেলার গল্প। আমরা বাস্তব মানুষেরা যে রূপকথার জন্যে বাঁচি, কেউ কেউ সেই রূপকথার খোঁজ আসলেই পায়। আর তাই সব হতাশা চেপে ক্লান্তকণ্ঠে আমরা আমাদের রাজকন্যাদের বলতে পারি… “তারপর তারা বাস করতে লাগল সুখে শান্তিতে…”

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “তেরো ঘর এক উঠোন”

Your email address will not be published. Required fields are marked *

তেরো ঘর এক উঠোন
You're viewing: তেরো ঘর এক উঠোন Original price was: ৳ 350.00.Current price is: ৳ 301.00.
Add to cart
Select the fields to be shown. Others will be hidden. Drag and drop to rearrange the order.
  • Image
  • SKU
  • Rating
  • Price
  • Stock
  • Availability
  • Add to cart
  • Description
  • Content
  • Weight
  • Dimensions
  • Additional information
Click outside to hide the comparison bar
Compare
Shopping cart close