Description
খলিল মজিদের কবিতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যা যৌথ সাংস্কৃতিক বিশ্ববীক্ষার চিহ্নায়ক দিয়ে গ্রথিত। তাঁর প্রথম কবিতার বই পালকাপ্য পড়তে গিয়ে অনুভব করি- এ কবি গভীরভাবে তত্ত্ব-সন্ধিৎসু। প্রজ্ঞা ও অনুভূতির সংশ্লেষণ তাঁর অন্বিষ্ট যা সাম্প্রতিক বাংলা কবিতায় ক্রমশ দুর্লভ হয়ে উঠেছে। খলিল কবিতার বয়ানকে কখনো বক্তব্যশূন্য করেন না, এই মনোভঙ্গি দিয়ে আসলে তিনি পলায়নপর সময়ের ভাষ্য রচনা করেন নিজেকে মহাসময়ের অঙ্গনে প্রতিস্থাপিত করে। তাঁর কবিতায় সাংস্কৃতিক ও নৈসর্গিক চিহ্নায়কের যুগলবন্দি আর ক্রিয়াপদের ঘরোয়া চলন বিশেষ তাৎপর্যবহ।
চিরায়ত সাম্প্রতিকের ভাষা কত সূক্ষ্মভাবে জাতীয় স্বভাবে সম্পৃক্ত তার দৃষ্টান্ত খলিলের কবিতা। খণ্ডকাল ও খণ্ডপরিসরের ক্ষয়ক্লান্ত রুদ্ধতাকে পেরিয়ে গিয়ে মহাসময় ও মহাপরিসরের দ্যোতনা সঞ্চারিত করেছেন তাঁর কবিতায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, তাঁর কবিতায় কয়েক সহস্্রাব্দ ধরে অর্জিত সাংস্কৃতিক চিহ্নায়কের পর্যাপ্ত ব্যবহার, কেননা আমাদের সামূহিক অবচেতনই আদিকল্পের আশ্রয়ভূমি।
তাঁর কবিতা ধাপে ধাপে ক্রমশ উৎসমূল থেকে যত এগিয়ে যায় লিখনপ্রণালীতে সচেতন নিরীক্ষাধর্মিতার ছাপ স্পষ্ট হয়। যেন শব্দ ও বোধের সিঁড়ির পর সিঁড়ি পেরিয়ে যান কবি, আর যেতে যেতে জীবনের সম্ভাব্য সমস্ত স্তর ছুঁয়ে যেতে চান।
এভাবে উপলব্ধি ও অনুভবের নানা পর্দা ছুঁয়ে যান খলিল এবং তাঁর নিজস্ব শিল্পিত বাচনে প্রকাশ করেন। ফলে কাব্যিকতার প্রচলিত ধরন মুছে যায়, তৈরি হয় কাব্যিক গ্রন্থনার নতুন আদল। ‘তরল মন্দিরা’কে মনে হয় কবির আত্মবিনির্মাণের সুষ্পষ্ট ঘোষণা।
–তপোধীর ভট্টাচার্য
Reviews
There are no reviews yet.