Description
মিশরের একটা প্রাচীন শহরের নাম অ্যাবাউদিস। শহরটার চারদিকে পর্বতমালা, সেগুলোর একপ্রান্তে অনেক পুরনো একটা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। সম্প্রতি মন্দিরটার একপাশের দেয়াল ঘেঁষে আবিষ্কৃত হয়েছে একটা কবর।আর দশটা সাধারণ কবরের মতো নয় সেটা। মাটির ঊননব্বই ফিট নীচে একটা বড় প্রকোষ্ঠে পাওয়া গেছে তিনটা কফিন। দুটো সম্ভবত আমাদের গল্পের নায়ক হারমাচিসের বাবা-মার। গুপ্তধনের লোভে চোরের দল নির্দয়ের মতো ভেঙে ফেলেছে কফিন দুটোকে। ভিতরে কী পেয়েছে ওরাই জানে; কিন্তু নতুন পর্যটকদের কাছে মিথ্যা বলে বিক্রি করতে পারলে ভালো আয় হবে বুঝে মমি দুটোও ফেলে যায়নি শয়তানের দল।কবরটা যখন আবিষ্কৃত হলো, তখন আমার এক ডাক্তার বন্ধু বেড়াতে গিয়েছিল লিবিয়ায়। দু’দিন সেখানে থাকার পর নীল নদ পার হয়ে অ্যাবাউদিসে গেল সে। তারপর ঘটনাচক্রে ওই তস্করবাহিনীর সর্দারের সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেল ওর। কফিন দুটো পাওয়ার ঘটনা আমার বন্ধুকে বিস্তারিত বলল লোকটা। আরও জানাল, একটা কফিন খুলতে বাকি রয়ে গেছে তখনও। কফিনটা দেখে নাকি আহা মরি কিছু মনে হয়নি ওদের, তাই হাত দেয়নি।কৌতূহলী হয়ে উঠল আমার বন্ধু। ছোট থেকেই সে বেশ অ্যাডভেঞ্চারাস, তাই “কবর-অভিযানের” সুযোগটা হারাতে চাইল না। মোটা ঘুষ দিল চোরের সর্দারকে, ওকে পথ দেখিয়ে ওই কবরে নিয়ে দারুণ উত্তেজিত হয়ে উঠল। প্যাপিরাসটা হাতে নিয়ে প্রায় ছুটে বেড়াতে লাগল সারা ঘরে। একটু পর থামল, এক লাফে এসে দাঁড়াল আমাদের সামনে। একবার আমার, আরেকবার আমার বন্ধুর সঙ্গে হাত মেলাতে আরম্ভ করল। মুখ চাওয়া-চাওয়ি করলাম আমরা দুই বন্ধু। পাগলের পাল্লায় পড়লাম কি না, ভাবলাম আমি। আমাকে বেশিক্ষণ চিন্তা করার সুযোগ দিল না বিশেষজ্ঞ লোকটা, চিৎকার করে বলল, ‘মরে গেলেও প্যাপিরাস তিনটা অনুবাদ করব আমি। কেউ ঠেকাতে পারবে না আমাকে। তারপর প্রকাশ করব অনুবাদ-গ্রন্থটা। ওসিরিসের শপথ, সারা দুনিয়ায় যত ইজিপ্টোলজিস্ট আছে, আমার বইয়ের খবর শুনে ছুটে আসবে লন্ডনে,’ বলেই আবার ঝাঁকাতে আরম্ভ করল আমাদের হাত।অনুবাদের কাজ শেষ হলো একসময়। ছাপাও হয়ে গেল বইটা। আর সেটাই এখন হাতে ধরে আছেন আপনারা।প্রিয় পাঠক, চলুন, ঘুরে আসি প্রাচীন মিশর থেকে। এখন ইতিহাস কথা বলবে আপনাদের সঙ্গে। কলম বন্ধ করলাম আমি, কারণ, আমাদের গল্পের নায়ক হারমাচিস মুখ খুলবে এখন। আপনাদেরকে শোনাবে ওর করুণ কাহিনী।
Reviews
There are no reviews yet.