Description
গোবিন্দলাল আর ভ্রমরের নয় বছরের দাম্পত্যজীবনে সুখের অন্ত ছিল না। ভ্রমর ছিল পতিঅন্তপ্রাণা, গোবিন্দলালের পত্নীপ্রেমে কোনো খাদ ছিল না। ভ্রমর ছিল তার হাতের পুতুল, খেলার সঙ্গী। ভ্রমর সুরূপা নয়―কালো। তবু গোবিন্দলাল স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীর কথা মনে স্থান দেয়নি; অন্তত রোহিণীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠার আগে তেমন কোনো সংবাদ পাই না। ভ্রমর রঙ্গচ্ছলে হলেও গভীর বিশ্বাসে গোবিন্দলালকে বলেছিল, ‘আমায় ভাবছ না? আমি ছাড়া, পৃথিবীতে তোমার অন্য চিন্তা আছে?’ গোবিন্দলালও তা-ই বিশ্বাস করত। কিন্তু এই সুখী দাম্পত্যজীবনে প্রথম ভাঙনের বীজ রোপিত হলো অনতিপরেই। রোহিণী বারুণীর জলে আত্মহত্যা করতে গেল; গোবিন্দলাল তাকে উদ্ধার করে তার জীবন রক্ষা করল। রোহিণী সেদিন পুনর্জীবন লাভ করল বটে, তবে গোবিন্দলালের মৃত্যুর সূচনা হলো সেই মুহূর্তে : ‘বাত্যাবর্ষাবিধৌত চম্পকের মত, সেই মৃত নারীদেহ পালঙ্কে লম্ববান হইয়া প্রজ্বলিত দীপালোকে শোভা পাইতে লাগিল।’ জলমগ্না মুমূর্ষু রোহিণীর রূপ তাকে বিহ্বল করে তুলল―গোবিন্দলালের রূপমুগ্ধতা বুঝি এ-ই প্রথম।রোহিণীর সৌন্দর্যের প্রতি বিস্ময়মুগ্ধতার সঙ্গে যোগ হলো গভীর মমতা। গোবিন্দলাল জানে রোহিণীর এই পরিণতির জন্য সে দায়ী―কেননা রোহিণীও গোবিন্দলালের প্রতি আসক্ত। গোবিন্দলাল বলে, ‘মরি মরি! কেন তোমায় বিধাতা এত রূপ দিয়া পাঠাইয়াছিলেন, দিয়াছিলেন ত সুখী করিলেন না কেন? এমন করিয়া তুমি চলিলে কেন?’
Reviews
There are no reviews yet.