Description
কুলদা রায়ের লেখার সঙ্গে আমার তেমন পরিচয় ছিল না। কেন ছিল না, সেটা পরে তার স্বভাব-সাকিন জেনে মালুম হয়েছে। আমার দুর্ভাগ্য, তার লেখালেখির সঙ্গে আমার জান-পয়চান হতে কিছু বিলম্ব হল। আমার সৌভাগ্য তার লেখার সঙ্গে আমার মােলাকাত হলাে।
কুলদা রায় তেমনভাবে পড়িনি বলে লেখক-বন্ধু অমর মিত্র আমার দিকে কিছুক্ষণ এমনভাবে তাকায়, যেন বা সে বড়দিনে আলিপুরে গেছে। আমার খুবই লজ্জা করে। কিছুদিন পরে আমার এক অস্ট্রেলিয়া-প্রবাসী বান্ধবী ইন্দ্রাণীর সৌজন্যে এবং প্ররােচনায় কুলদা রায়ের লেখালেখির সঙ্গে একটু দীর্ঘ সাক্ষাৎকার হয়। তার বই-এর ভূমিকা লেখার ব্যাপারে আমার মতামত চাইলে মনে হয় আমি তাে দেবদূত নই যে ডর পামু। আমি ইবলিস ফেরেশতার অগম্য স্থানে যাইতে ডর হয় নাই। রাজি হয়ে যাই।
বস্তুত বাংলা গদ্যসাহিত্যে এ ধরনের লেখার সঙ্গে আমার আগে কোনাে পরিচয় ছিল না। কমলকুমারের সৌন্দর্যচেতনা, বিভূতিভূষণের প্রকৃতিকে দেখা, রবীন্দ্রনাথের দুঃখের ভেতর দিয়ে সত্যকে দেখা, এমন কি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের রাতের কড়া নাড়ার ছলে কোনাে এক অবনীকে খুঁজে ফেরার কথা কুলদা তার স্বকীয় শৈলীতে এমন ভাবে নির্মাণ করেছেন যে, বিস্মিত হতে হয় এমনভাবেও গল্প বলা যায়। কখনাে মনে হয় স্মৃতিচারণা, কখনাে একজন প্রকৃতিবিদের ডায়ারি, কখনাে বা একজন পাগল, প্রেমিক বা একজন উদাসীন কথকের মায়াজড়ানাে কথকতা বুঝি। একজন সামান্য গল্পকার হিসেবে টের পাই তার এক পাতা, দু’পাতার ছােট ছােট আখ্যানগুলাে অনায়াসেই হতে পারত তথাকথিত উপন্যাসােপম বড় গল্প । অথচ মিতকথনের চারুতায়, সুঃয-কথনের রহস্যময়তায় কী অসাধারণ নান্দনিক, শৈল্পিক সুষমারঞ্জিত হয়ে উঠেছে তার এই লেখাগুলাে।
Reviews
There are no reviews yet.