Description
পথের পাঁচালী (১৯২৯) ও অপরাজিত (১৯৩২) বাংলা উপন্যাসসাহিত্যের অমূল্য সৃষ্টি। কল্লোলপ্রভাবিত কালের অস্থিরতা ও কৃত্রিম মতাদর্শের বিপরীতে পথের পাঁচালী ও অপরাজিত বাঙালি মননের মুক্তির ইশারা নিয়ে আসে। বিভূতিভূষণের এই অপরাজেয় সৃষ্টিদুটিতে মানুষের নিরন্তর সংগ্রাম ও অস্তিত্বসাধনার কথা উজ্জ্বল হয়ে ফুটে উঠেছে। অপু ও দুর্গা চরিত্রের মধ্য দিয়ে চিরন্তন শিশুর দ্বৈতসত্তার দুই স্বতন্ত্র রূপ চোখে পড়ে। নিশ্চিন্দিপুরের অতিসাধারণ জীবন থেকে বেরিয়ে অপু তথা অপূর্ব এক বৃহত্তর মহাজীবনের পথিক হয়ে ওঠে। হরিহর, সর্বজয়া, দিদি দুর্গা ও পিসি ইন্দির ঠাকরুনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নিম্নবিত্ত পরিবারটি নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আবহমান ভারতীয় জীবনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। কাল-মহাকাল পেরিয়ে নিশ্চিন্দিপুরের মায়াময় পরিবেশ ছেড়ে অপু অবতীর্ণ হয় ভিন্নরকম যুদ্ধে। স্মৃতিময় গ্রাম ছেড়ে কাশী এবং অতঃপর মহানগর কলকাতায় তার প্রবেশ। নায়ক থেকে ক্রমাগত সে মহানায়কে পরিণত হয়। ভাবুক অপু অন্তর্জগতে এক মগ্ন কবি এবং উত্তর-জীবনে সে প্রতিষ্ঠা পায় লেখক হিসেবে। অপর্ণাকে নিয়ে তার দাম্পত্যজীবন এক স্নিগ্ধ গার্হস্থ্যের ছবি সামনে আনলেও অচিরেই অপু শুনতে পায় সুদূরের ডাক। শৈশবসঙ্গিনী রাণুদির কাছে একমাত্র পুত্র কাজলকে মানুষ করার ভার দিয়ে অপু ফিজি দ্বীপপুঞ্জে যাত্রার সিদ্ধান্ত নেয়। জীবনের এক অপূর্ব গতিচেতনাই এই উপন্যাসদ্বয়ের মুখ্য সুর। জন্ম-জন্মান্তরের বিচিত্র অভিজ্ঞতার পথ অতিক্রম করে মানবাত্মার এক অভিযাত্রীরূপ এতে স্ফুট হয়ে উঠেছে। নিত্যচলমান জীবনের অধিষ্ঠাত্রী পথিক দেবতার গান পথের পাঁচালী ও অপরাজিত।
Reviews
There are no reviews yet.