Description
কবি ও কথাসাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্র দৃষ্টি-প্রদীপকে বিভূতিভূষণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস বলে বারবার উল্লেখ করেছেন। “কাহিনির নায়ক জিতুর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উৎসারিত হয়েছে এই কাহিনি। তার বিশেষ ধরনের দৃষ্টিপাতকে দৃষ্টিপ্রদীপ বলা হয়েছে।” দৃষ্টি-প্রদীপ উপন্যাসে বিভূতিভূষণ আচারসর্বস্ব ধর্মের অন্তঃসারশূন্যতা এবং এই ধর্মনিষ্ঠার নামে মনুষ্যত্বের নির্মম লাঞ্ছনা এবং মানুষের জাগতিক অসহায়ত্ব এবং শক্তিমানদের দ্বারা উপেক্ষিত মানুষের অসহায়ত্বের হৃদয়স্পর্শী বিবরণ এ উপন্যাসকে চিরায়ত সৃষ্টির মহিমা দান করেছে। দৃষ্টি-প্রদীপ উপন্যাসেও বিভূতিভূষণের লোকোত্তর চেতনার অনবদ্য প্রকাশ ঘটেছে।রোমাঞ্চধর্মী শ্বাসরুদ্ধকর এক অভিযানের কাহিনি বিভূতিভূষণের চাঁদের পাহাড়। আদিম আফ্রিকার পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা রহস্য, বিপদাশঙ্কা, সৌন্দর্য ও ভয়ংকরতার অপূর্ব অভিজ্ঞতা মুগ্ধ ও শিহরিত করে পাঠককুলকে।অরণ্যজীবন নিয়ে লেখা বিভূতিভূষণের আরণ্যক উপন্যাস বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। ভাগলপুরে দেখা অরণ্যপ্রকৃতি ও সেখানকার অরণ্যচারী মানুষদের নিয়ে লেখা এ উপন্যাস। ঔপনিবেশিক কলকাতার শিক্ষিত যুবক গল্পকথক সত্যচরণের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণিত হয়েছে এর কাহিনি। আরণ্যক-এর বিষয় প্রকৃতি ও মানুষ। প্রাচীন ভারতের অরণ্যচারী মুনি-ঋষিদের জীবনযাপনের কথা মনে রাখলে এ উপন্যাসে উপনিষদের ব্যঞ্জনা অনুভব করা যায়। পাশ্চাত্য সাহিত্যেও অরণ্যজীবন নিয়ে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য রচনা রয়েছে। কিন্তু অরণ্যের অবয়বকে তারা এঁকেছেন, বিভূতিভূষণের মতো অরণ্যের আত্মাকে তারা আবিষ্কার করতে পেরেছেন বলে মনে হয় না।আদর্শ হিন্দু-হোটেল উপন্যাসটি হাজারি দেবশর্মার স্বপ্নসঞ্চারের আখ্যান। সতত ব্যস্ত একটি রেলস্টেশন এবং তার সন্নিহিত একটি সাদামাটা ভোজনালয়কে নিয়ে গড়ে উঠেছে উপন্যাসের কাহিনি। রান্নার কাজে হাজারির রয়েছে অসাধারণ দক্ষতা ও খ্যাতি। চারপাশের মানুষ তথা বেচু চক্কতি ও পদ্মদিদির যাবতীয় লাঞ্ছনা ও কুৎসিত মনোভাবকে জয় করে খাড্ডে কোম্পানির আহ্বানে হাজারি বোম্বের পথে যাত্রা করে। হাজারির স্বপ্নবিস্তারের উজ্জ্বল অভিযাত্রায় অসাধারণ মহিমা লাভ করেছে উপন্যাসটি।
Reviews
There are no reviews yet.