Description
হাসান আজিজুল হকের মতো এত প্রখর সমকালবিদ্ধ ও বাস্তববাদী লেখক বাংলা সাহিত্যে খুব বেশি পাওয়া যায়না। বাস্তবকে দুমড়ে বাস্তব নির্মাণ করা যাঁর লেখার উদ্দেশ্য, যিনি লেখককে মনে করেন ঘুণপোকা যার কাজ কাঠের উপরিতল কেটে ক্রমেই ভিতরে চলে যাওয়া, তারপর একের পর এক স্তর অতিক্রম করা, বাস্তবকে বাস্তবতর করা কিংবা লেখককে যিনি তুলনা করেন শুঁয়োপোকার সাথে, সমাজের বাস্তবকে প্রতিমুহূর্তে শুষে নেয়া যাঁর কাজ, আন্তরবাস্তবকে হাজির করেন যিনি পাঠকের সামনে তিনি আর কেউ নন হাসান আজিজুল হক, বাংলা ছোটগল্পের ‘রাজপুত্তুর’। তাঁর নিজের ভাষ্যে: “বাস্তব পুরোটা ধরা দেয়না। কিছুটা লুকিয়ে থাকে। বাস্তবকে পুরোপুরি ধরাই লেখকের কাজ।” আর এজন্যই একজন সামান্য আখ্যানকার কিংবা কাহিনিকারে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননা হাসান। পাঠককে লঘু-চটুল বিনোদন দেয়ার মতো সহজ কাজকে তিনি বেছে নেননি কখনো। আপন জনপদ ও তার মানুষের স্বপ্ন-সম্ভাবনা, গণবিরোধী রাজনীতির অমোঘ পরিণতি হিশেবে ব্যক্তি ও সমাজের অবক্ষয় তাঁকে কলমযোদ্ধা হবার ব্রতী করে তোলেন।
দেশবিভাগ, রাজনীতি, সাম্প্রদায়িকতা, রাঢ়বঙ্গের জীবন ও ভাষা, যুদ্ধ-সংঘাত, নারী-পুরুষের সম্পর্কের আবর্তন, নিম্নবর্গ-নিম্নমধ্যবিত্ত, শ্রেণির জীবনাচরণ, শোষক শ্রেণির সীমাহীন জুলুম-নিপীড়ণ ও তার বিরুদ্ধে শোষিতের মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা, দেশবিভাগ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির আভ্যন্তর বিকার, ব্যাধি, অসঙ্গতি, জটিলতা এবং ক্লেদাক্ত-ক্ষয়িষ্ণু, গলিত-পচনশীল নষ্ট-ভ্রষ্ট সমাজ- রাষ্ট্র-ধর্মের কাছে ব্যক্তির অসহায়ত্ব-অস্তিত্বহীনতা, সেই অসহায়ত্ব-অনস্তিত্ব থেকে পুঞ্জিভূত হতে থাকা ক্ষোভ-সংগ্রাম তথা অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই, স্বপ্নভঙ্গ ও নতুন স্বপ্নের বীজ বপন-এসবই হাসান আজিজুল হকের গল্পের উপজীব্য।
Reviews
There are no reviews yet.