Description
“কথায় বলে, বিকলাঙ্গ মানুষের পাশে যদি আপনি দীর্ঘদিন বসবাস করেন, তাহলে আপনার ভেতরটাও বিকলাঙ্গ হয়ে যেতে সময় লাগবে না। আমি চাইলে আমার স্বামীকে ফেলে রেখে চলে যেতে পারতাম। যেমন করে চলে গিয়েছিল আমার বান্ধবী রত্না। চরিত্রহীন এক স্বামীর সঙ্গে নির্দ্বিধায় আমাদের তিনজনকেও ফেলে দিয়েছিল জীবন থেকে।” (গল্প: বন্ধুতার চতুর্ভুজে…)
“এরপর আরও দু`চারটি মেয়ের সঙ্গে ভুবন চেষ্টা করেছিল প্রেম করতে, কিন্তু সফল হয়নি। হবে কি করে, চেহারার যা ছিরি! একেবারেও অকাব্যিক! অনেকটা হাড়গিলের মতো। ভুবন নিজেও জানে, খুব সহজে মেয়েরা তার প্রেমে মজবে না। কিন্তু মনটা কেমন আনচান করে।” (গল্প: হায়রে ভুবন)
“আজ সকালে ঘুম ভেঙ্গেছে একটু দেরিতে। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ফরহাদ সাহেব সত্যিই অবাক হলেন, টেবিলের উপর তার জন্য রাখা নতুন পান্জাবীর সেট। পাশে ছোঁয়ার শাড়ি। আজও শাড়ি পান্জাবি রাখা আছে তবে তা ছোঁয়ার ডিজাইন করা নয়, আড়ং থেকে কেনা এবং দুটো ভিন্ন রঙের।” (গল্প: স্বপ্নছোঁয়া)
“কাল সারারাত সেভাবে ঘুম হয়নি, মেয়েটাকে এত তাড়াতাড়ি বিদায় করে দিচ্ছি এই ভেবে। একটু আগেই খুব ক্লান্ত লাগছিল বলে ভাবছিলাম দশটা মিনিট একটু ঘুমিয়ে নেব, পাওয়ার ন্যাপ। দেহঘড়ির কলকব্জাগুলোর বলার ক্ষমতা থাকলে হয়তো তীব্র প্রতিবাদ করতে করতে বলে উঠত, “আর কত, অনেকতো সার্ভিস দিলাম, এবার আমাদের ক্ষমা কর, দিন-রাত চলতে চলতে আমরা ক্লান্ত…”” (গল্প: করলার মতো ভালোবাসা)
“এই যে সংসারের জন্য নিজস্ব বলে কিছু হলো না, এরও তো কত প্রাপ্তি আছে। সেই প্রাপ্তি তো কম নয়। তবু কোথায় যেন এক শুন্যতা, যার কোনো নাম নেই। সেই শুন্যতার মুখোমুখি একবার, অন্তত একবার দাঁড়াতে চায় মনিরা। আর কারো জন্য না, কোনো কর্তব্যের জন্য না, শুধু নিজের জন্য, নিজের সাথে একান্ত আলাপের জন্য এই ছুটিটা তার ভীষণ প্রয়োজন।” (গল্প: ছুটি)
“শোষণ বঞ্চনা একটি জাতির মনে কতটা ক্ষোভের জন্ম দিতে পারে সেটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস না পড়লে কেউ অনুধাবন করতে পারবে না। এদেশের মানুষ একদিনে বা এক বছরে এত সাহস আর শক্তি সঞ্চয় করেনি। পুঞ্জীবিত ক্ষোভ আর বেদনা যে দুর্বলদেরও শক্তিশালী করে তোলে তার একটা নজির বাংলার মানুষের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস।” (গল্প: মুক্তিকামী বীরের গল্প)
“তোমার সমস্ত ‘না পাওয়া’ আর ‘বেদনা’র মাঝে প্রতিনিয়ত আমি আমার ব্যর্থতা আর হেরে যাওয়া খুঁজে পেতাম। এক পা এগুলে কে যেন আমায় পেছন থেকে দশ পা টেনে নিত। সময় কী ভীষণ নিষ্ঠুর! কিচ্ছু পেতে দিল না আমায়! নাকি আমিই হাত গুটিয়ে থাকলাম! এ কি এক প্রত্যাখ্যাত তরুণীর আহত অহং! নাকি সত্যিকারের ‘মা’ হতে না পারার অনির্বচনীয় ব্যথা? ” (গল্প: জননী)
“আর ঠিক তখনই টের পায়, আচমকা এক জোড়া হাত ওর হাতের পাতায় নখ বিধিয়ে খামচে ধরেছে ভীম আলিঙ্গনে। আর সেই সাথে মাঠির গভীর থেকে খুব চাপাস্বরে একটা জান্তব গোঙ্গানির মতো আওয়াজ বেরিয়ে এলো। হাতদুটো কেউ একজন অথবা বলা ভালো, কিছু একটা টেনে ধরেছে ওকে। মাটির তলায় যেন প্রচন্ড তোলপাড় করছে একটা কিছু।” (গল্প: কবর)
“ঠিক ইকোনো কোম্পানির বলপয়েন্ট কলম আর নিউজপ্রিন্ট কাগজে লেখা শুরুর প্রাক্কালের এই ঘটনা। তখনো ফাউন্টেন পেন আর দোয়াতের কালিতে লেখা হয় আমাদের। বড়ভাই কলেজের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে কিছুটা দামি ঐ কলমটা উপহার পেয়েছিলেন। কোনো এক বিশেষ বান্ধবীকে দেওয়ার জন্য তার গায়ে একটা অক্ষর খোদাই করেছিলেন।” (গল্প: ফাউন্টেন পেন)
“এতদিন পরেও, আমি তোমার কথা ভাবি। তুমি তো এখন আর সেই ছোট্ট মেয়েটি নেই! আমার কল্পনায়, তোমাকে আমি একজন শিক্ষিত, স্বাবলম্বী আর স্বতন্ত্র নারী হিসেবে দেখতে পাই! যে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে সক্ষম। যেমনটা আমি দেখতে চাই আমাদের সমাজের প্রতিটি নারীর মাঝে! আমি স্বপ্ন দেখি এমন একটি সমাজের-যেখানে একটি শিশু, শুধু মেয়ে বলেই, শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় না বা নির্যাতনের শিকার হয় না!” (গল্প: পারাবত এক্সপ্রেসের মেয়েটি)
Reviews
There are no reviews yet.