Description
“বসন্ত বর্ষার দিগন্ত” বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া
বছর পাঁচেক আগের কথা। দুবাই থেকে দেশে ফিরছি। আমার টিকিট ছিল ইকোনােমিক ক্লাসের। কিন্তু ইকোনােমিক ক্লাসে প্যাসেঞ্জারের সংখ্যা অধিক থাকায় এমিরেটস্ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ আমাকে বিজনেস ক্লাসে সিট করে দিলাে। আমার পাশে যে-ভদ্রলােক বসেছিলেন তিনিও বাংলাদেশি, তবে তার আমেরিকান নাগরিকত্ব আছে। তিনি বিশাল ব্যবসায়ী, অনেক টাকার মালিক, সিটটাও ছিল বিজনেস ক্লাসের। অবতরণের সময় বিমানের চাকা যখন ঢাকা বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করল তখন দেখি তার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। আমি অবাক হয়ে বললাম, আপনার শরীর এভাবে কাঁপছে কেন? দেখি ভদ্রলােকের চোখে পানি চলে এসেছে। ভদ্রলােক কাপা কণ্ঠে উত্তর দিলেন, ‘এটা হচ্ছে দেশের প্রতি ভালােবাসা আর মায়ার টান। আমি একত্রিশ বছর বিদেশে থেকেও বিদেশি হতে পারিনি, পারবও না, সম্ভবও না। আমি যখনই এই এয়ারপাের্টে আসি তখনই আমার এরকম শরীর কাঁপতে থাকে, চোখে পানি এসে যায়।’ ভদ্রলােকের অনুভূতিটা আমি বুঝতে পেরেছিলাম। দেশে এলে তিনি প্রত্যেকবারই দেশের প্রতি তাঁর তীব্র ভালােবাসার আবেগে আবেগাপ্লুত হন। এটা শুধু ঐ ভদ্রলােকের ক্ষেত্রেই নয়, সবার ক্ষেত্রেই ঘটে। দেশে এবং বিদেশে এরকম অনেক অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। কিছু কিছু অভিজ্ঞতা সত্যি আনন্দের যা বসন্তের মতাে আনন্দ নিয়ে আসে, আবার কিছু কিছু অভিজ্ঞতা অত্যন্ত মর্মান্তিক যেগুলাে বর্ষার মতাে কান্নার ধারা ঝরায়। এই সকল আনন্দ-বেদনার সংমিশ্রণে ছােট্ট উপস্থাপনা ‘বসন্ত বর্ষার দিগন্ত’- যেখানে ‘দিগন্ত’ হলাে হাতছানি দিয়ে ডাকা সেই বিদেশ যেখানে গিয়ে আসলে আমরা বুঝতে পারি দেশ কত আপন, দেশ কত প্রিয়, দেশ কত ভালােলাগার ও ভালােবাসার।
Reviews
There are no reviews yet.