Description
লেখকের কথা ২০০১ সাল। মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত তখন। ভয়ঙ্কর এক ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। সেই সময়টায়-নিজেকে ব্যস্ত রাখা খুব জরুরি ছিল। কোনোভাবেই মস্তিস্ককে অলস রাখা যাবে না। মনটা একটু সুযোগ পেলেই সে ভাবতে বসবে- আর তখুনি হবে আমার কর্ম সাবাড়!br শুরু করলাম লেখালেখি। দিনরাত লেখালেখি নিয়ে পড়ে থাকি- মনে যা আসে তাই লিখি। কোনো ধারাবাহিকতা নেই- লেখাগুলো কারো উদ্দশ্যে নয়- শুধু নিজের জন্য লিখে গেছি। মস্তিস্কের পাশাপাশি শরীরটাকেও ক্লান্ত করতে হবে ভেবে জিম শুরু করলাম। বন্ধু হায়দার উসকালো ফটোগ্রাফি শেখার জন্য- ভাবনা চিন্তা না করেই চ্যালা হয়ে গেলাম ‘চঞ্চল মাহমুদের’।br নিজের গানের গলা নেই। দরদী গলায় কন্ঠ ছাড়লে দিলে মনে হয় চেচাচ্ছি- মিউজিকের শখ ছিল ছেলেবেলা থেকেই। গিটারটা বড় বেশি খটমটে লাগত- তাই রুশীয় এক শিক্ষিকার তত্ত্বাবধানে পিয়ানো শেখা শুরু করলাম। তবে আমার অন্য সবকিছুর মত এগুলোও শুরুর কাতারেই রয়ে গেল শেষ করা হলোনা কোন কিছুই। যেই বয়সে মানুষ সংসারি হয় আমি সেই বয়সে ছন্নছাড়া হলাম।br ভ্রমণের নেশা আগে থেকেই ছিল। আশি ভাগ বেকার আমি তখন- কিন্তু তবুও ছুটিছাটা ছাড়া বেশ কিছু দিনের জন্য বেড়িয়ে পড়া মুশকিল।br ফের ওই বন্ধুর প্ররোচনায়, আরেকটু সিরিয়াস হলাম। আমাকে অফার করল- চল এবার ঈদে দেশের বাইরে ঘুরে আসি। কী বলে!! দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়া মানে বড় খরচের ধাক্কা! এত টাকা আমি কোথায় পাব?br সে আমাকে আশ্বস্ত করে বলল, বিদেশ বলতে তো ঘরের পাশ ভারত আর নেপালে যাব। আমি যে হিসাব করেছি তা- বেশ অল্প টাকায় হয়ে যাবে। যাবা কিনা বল? ভিসা টিকেট সহ সবকিছুর দায়িত্ব সে নিজেই নিল। আর আমার আপত্তি করার কিছু রইল না।br ঈদের দু’দিন আগে আমরা চলে গেলাম দার্জিলিং এ- ঈদটা করলাম সেখানে, একটু অন্য আমেজে। সেখান থেকে গেলাম কাঠমুন্ডু হয়ে পোখারা। সব মিলিয়ে পাক্কা পনের দিনের ভ্রমণ। তখন অন্তর্জালে এত রেফারেন্সের সমাহার ছিলনা। সবকিছুতেই ছিল নতুনত্ব আর ভিন্নস্বাদ! এখন অনেকের কাছেই এই ভ্রমণগুলো এলেবেলে হয়ে গেছে! ভ্রমণটা এখন হলে আর হয়তো লিখতাম না। সময় ছিল বলেই এই ভ্রমণের আদ্যোপান্ত তখন লিখে রেখেছিলাম। এখন হয়তো সবকিছু খানিকটা পাল্টে গেছে। সদ্য যারা গিয়েছে তারা হয়তো পরিবর্তনটা ধরতে পারবেন। br রাশিয়া ভ্রমনের বাইরে আমি হংকং আর মালয়েশিয়া নিয়ে দু-ছত্র লিখেছিলাম। এর বাইরে এই প্রথম বড় কলেবড়ে আমি হাতের নাগালে দুটো দেশের ভ্রমণ কহিনী লিখছি। দুজন মানুষের প্রেমের গল্পে যেমন ভিন্নতা থাকে -তেমনি আমার এ ভ্রমণ গল্পেও খানিকটা ভিন্নতা থাকবে এটা আর বলার প্রয়োজন কি!br এত দীর্ঘ প্যাঁচালের শেষে একটা কথা বলি যেটা শুনে খরুচে ভ্রমনকারীরা একটু চমকে যাবেন। দু’জনে বেশ আয়েশে ভ্রমন করেও সাকুল্য খরচ হয়েছিল মাত্র চারশ ডলার! জন প্রতি দুশো করে…br – শেরজা তপন

														



Reviews
There are no reviews yet.