Description
“একজন আধুলি” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
এই উপন্যাসটি বাংলাদেশের একটি আধুলির আত্মকাহিনি। ঘটনাচক্রে আধুলিটি তার মালিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের কোটের পকেটে করে ফিনল্যান্ড যাত্রা করে। সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে ইউরােপীয় ইউনিয়নের কিছু মুদ্রার সাক্ষাৎ হয়। এগুলাের মধ্যে একটি ছিল ৫০ সেন্টের ইউরাে মুদ্রা। কিছুদিনের মধ্যেই এই মুদ্রার সঙ্গে আধুলিটির বন্ধুত্ব হয়। তারা দুজনে মিলে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের সংলাপে অংশ নেয়। এই বন্ধুত্বপূর্ণ সংলাপের মধ্যেও ৫০ সেন্টের ইউরাে মুদ্রাটি বাংলাদেশের আধুলিকে যুক্তিতর্কে নানাভাবে পরাজিত করতে চায়। জামার্নির ইতিহাস ও সংস্কৃতির চিহ্ন বহনকারী ইউরাে মুদ্রাটি প্রতিমুহূর্তে আধুলির তুলনায় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। কারণ তার মধ্যে জার্মানদের নীল রক্ত বইছে। এ ছাড়া সে মুদ্রা হিসেবে ইউরােপের অনেক দেশের বহনযােগ্য মাধ্যম। সে কারণেও তার লােকপ্রিয়তা বাংলাদেশের আধুলির তুলনায় অনেক বেশি। অন্যদিকে, বাংলাদেশের। আধুলিটি নিতান্তই তার নিজস্ব অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ইউরােবন্ধুর সঙ্গে যুক্তিতে অবতীর্ণ হয়। এভাবেই এই উপন্যাসের ঘটনাচক্র আবর্তিত হয়। পরিশেষে দুই বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যখন পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরে আসে, তখন আধুলিসহ ইউরাে মুদ্রাটিও কোটের পকেটে করে বাংলাদেশে চলে আসে। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর ইউরােমুদ্রাটি শিক্ষকের স্ত্রী কর্তৃক সাদরে গৃহীত হয় এবং এর স্থান হয় গােপন ড্রয়ারের সুরক্ষিত অংশে। অন্যদিকে, দুর্বিপাকে পড়ে দেশীয় আধুলিটির জায়গা হয় বাসার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ময়লার ড্রেনে—যেখানে সে এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
এই উপন্যাসে দুটি মুদ্রার মধ্যেই মানবীয় গুণ আরােপিত হয়। ফলে এই দুটি মুদ্রার সংলাপের মধ্য দিয়ে যেন প্রকারান্তরে মানব ইতিহাসেরই নৃগত, জাতিগত বৈষম্য, হিংসা, অহংবােধ এবং নিজের শ্রেষ্ঠত্বের চিত্রটি প্রতিফলিত হয়েছে।
Reviews
There are no reviews yet.