Description
লেখকের ভূমিকা
উমরার স্মৃতি নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু হৃদয়ে উৎসারিত আবেগকে অক্ষরের বন্ধনে প্রকাশ করতে না পারলে হয়তো অনেক হীরণ্ময় মুহূর্ত হারিয়ে যেত জীবন থেকে। তাই মুহূর্তগুলো ধরে রাখতে চেয়েছি। মক্কা-মদিনা জিয়ারতের সময় হৃদয়ে যেসব অনুভূতি উদ্গত হয়েছে ন্যুব্জ চারাগাছের মতো, তার কিছুটা চেষ্টা করেছি সঙ্গে সঙ্গে লিখে ফেলতে। তবু কি সব কথা বলা হয়?
এ বই প্রকাশের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলো, উমরার মতো একটি পুণ্য সফরকে সাধারণ মানুষের জন্য সহজ করে বর্ণনা করা। কেউ যদি ইচ্ছা করেন তবে তিনি যেন নিজে বা পরিবার নিয়ে একা একা উমরা করতে পারেন, সে ব্যাপারে সর্বসাধ্য উপায় ও তরিকা বাতলে দেয়ার চেষ্টা করেছি। বিদেশ বিভুঁই বলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সাধারণ যে কেউ কোনো রকম মুয়াল্লিম/ট্রাভেল এজেন্সি ছাড়া একা বা নিজেরা যাতে উমরা করতে পারেন, সেই সাহস দেওয়াই উদ্দেশ্য ছিল এ বইয়ে।
আমি নিজেও ভাবিনি যে এত জলদি আমার সামনে উমরায় যাওয়ার সৌভাগ্যের দুয়ার খুলে যাবে। হঠাৎ মাত্র দুই সপ্তাহের প্রস্তুতিতে আমি এবং আমার সহধর্মিণী নিজেরা একা একা চলে গিয়েছি উমরায়। সেখানে উমরার সকল কাজ এবং ১৬ দিন একা একাই অবস্থান করেছি। কোনো সমস্যা হয়নি। এ জন্য এ বইয়ের নামও রেখেছি উমরায় একা দুজনে । এ নাম ও বই যেমন আমাদের সফরকে বিবৃত করবে, তেমনি যাঁরা একা একা উমরায় যাওয়ার ইচ্ছা রাখেন তাঁদের জন্যও রাহনুমায়ি করবে নিঃসন্দেহে। আমরা বিদেশে বেড়াতে গেলে সেখানে যদি কোনো গাইড বা ট্রাভেল এজেন্ট না লাগে, তাহলে উমরায় যেতে কেন মুয়াল্লিম বা ট্রাভেল এজেন্সির প্রয়োজন হবে?
ধন্যবাদ প্রাপ্য আমার সহধর্মিণী রাবেয়া আফরোজের। তার জীবনের আরাধ্য সাধ ছিল ‘নিজের জমানো টাকায়’ উমরা করার। এ জন্য সে বহুদিন থেকে টাকা জমিয়ে আসছে। সময়-সুযোগমতো আমার কাছ থেকে ১০০-৫০০, আব্বা-আম্মা, শ্বশুর-শাশুড়ি বা স্বজনদের থেকে পাওয়া হাদিয়া-ঈদ সালামি, কখনো জামা-কাপড় বা প্রয়োজনীয় জিনিস না কিনে সেসবের উদ্ধৃত টাকা, যেখান থেকে তার কাছে সামান্য সামান্য যা জমেছে, সেগুলো সে আলাদা করে রেখেছে।
আলহামদুলিল্লাহ! হঠাৎ করে যখন উমরায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, সে সেসব জমানো টাকা একসঙ্গে করে আমার কাছে নিয়ে এল। গুনে দেখলাম ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার মতো! নিজের উমরার খরচ জোগাড় করে ফেলেছে আল্লাহর বান্দী! হয়তো তার হৃদয়ের ঐকান্তিক ইচ্ছার বদৌলতে আল্লাহ আমাকেও তার সঙ্গে উমরার জন্য কবুল করেছেন। নইলে আমি তো আমার মধ্যে এমন কোনো যোগ্যতা দেখি না, যার দরুন আল্লাহ আমাকে তাঁর ঘরের তাওয়াফ ও হাজরে আসওয়াদ চুমু দেওয়া এবং মসজিদে নববিতে রওজায়ে আতহারে নামাজের সুযোগ করে দেবেন। হাযা মিন ফাদলি রাব্বী।
Reviews
There are no reviews yet.